মেশিনচর্চার মোরালিটি

May 06, 2020

আমাদের হাতে যেসব ডেটা আছে— তা দিয়ে বহু বহু ইনসাইট পাওয়া সম্ভব। বহু সমস্যারে কম্পিউটিফাই করার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। প্রশ্ন হলো, সবকিছুর সমাধান করা নৈতিক কিনা। দুটো প্রকল্প আমারে এই বিষয়ে ভাবাইতেছে।

প্রকল্পের আগে এক বিখ্যাত সিনামার দৃশ্য খেয়ালে আনা যাক। ২০০১: আ স্পেস অডিসিতে আমরা দেখছিলাম যে— হাল ৯০০০ নামের যে মেশিন মহাকাশযানটারে চালাইতেছিলো— এক পর্যায়ে সে নভোচারীদের পরিকল্পনা বুঝতে তাদের ফুটেজ দেখে এবং কথা বলার সময় ঠোঁটের নড়াচড়া দেখেই তাদের কথাবার্তা বুঝে ফেলে। মানুষের ক্ষেত্রে লিপ রিডিংয়ের এই কাজ ভয়াবহ দুরুহ হলেও ঠিকঠাক ডেটা পাইলে মেশিনের জন্য ভাতপানি।

তেমনই একটা প্রজেক্ট দেখছিলাম ২০১৭ সালের কম্পিউটার ভিশন অ্যান্ড প্যাটার্ন রিকগনিশান কনফারেন্সের[১]। ফুটেজ দেখে তার ভেতরের কথাবার্তা বলে দেয়ার মেশিন শুধু সম্ভবই না, এতোদিনে তা হয়তো বাস্তব। এইটুলগুলো স্বভাবতই ভীষণভাবে ব্যবহার হইতে থাকবে গভমেন্টগুলোর সাইভেইলেন্সে। অর্থাৎ গণবিচ্ছিন্ন একটা রেজিমরে টিকায় রাখতে এবং গণ-র স্বাধীনতারে হরণ করতে এই গবেষকরেরা কি দারুণভাবে সাহায্য করতেছেন! আমরা বোধহয় পয়লা প্রশ্নে ফেরত যাইতে পারি। ডেটা দিয়া কতোকিছুই তো করা যায়— সবকিছু কইরা ফেলা কি ঠিক?

আরেক প্রকল্প নিয়া আমি নিজেই কাজ করছি কিছুদিন। হিউম্যান টাস্ক ক্লাসিফিকেশান। বিভিন্ন সেনসর-রাডার ইত্যাদিতে মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপের ডেটা রেকর্ড করা হবে। সেই ডেটা থেকেই বোঝা যাবে মানুষ সেই জায়গায় কি করতেছে— হাটতেছে, খাইতেছে, ঘুমাইতেছে ইত্যাদি। কোনো ফুটেজের দরকার নাই। বই সাইজের একটা মেশিন ঘরের কোথাও থাকলেই হবে। এইসমস্ত প্রকল্পের বহু কল্যানকর উপযোগ আছে, তবু রাষ্ট্রের এই হোমড়ামিপনায় নিজের জায়গা থেকে অসহযোগিতা করতে গেলে মেশিনরে ইথিক্স পড়ানোর আগে বরং মেশিনচর্চার একটা মোরাল স্ট্যান্ডপয়েন্ট খুঁইজা পাওয়া দরকার।


[১] আনঅফিসিয়াল ভিড্যু
[২] কভার ফটো: Matthew Wiebe

টেকনোলজিমেশিন-লার্নিংমোরালিটিইথিক্সদর্শন

বিজ্ঞান করা

মায়া সাইকেল